The Matbar and the Bus
by Prashanta Tripura for AlalODulal.org
রাঙামাটি থেকে ঢাকা ফিরছিলাম গত রাতে, বিআরটিসির বাসে। যাত্রা শুরুর পর এক পর্যায়ে আমার আশেপাশের সহযাত্রীদের মধ্যে দেশোদ্ধারমূলক একটা উন্মুক্ত আলোচনা চলল কিছুক্ষণ, যাতে আমিও অংশ নিয়েছিলাম কিছুটা। তখন প্রথম আমার পেছনের সারিতে বসা চুল ও দাঁড়িতে মেন্দি লাগানো এক লোকের আলাদা একটা স্বর খেয়াল করি আমি। তিনি – যাঁকে ‘মাতবর’ বলে ডাকব এরপর – অপ্রাসঙ্গিকভাবে বলতে শুরু করলেন, ‘জাপান, আমেরিকা এসব দেশের বাহিরটা যতই ভাল দেখাক, ভিতরে অনেক সমস্যা। ওসব দেশে ছেলেমেয়েরা একসাথে বাথরুমে যায়…’ ইত্যাদি।
এক সহযাত্রী কালচারের ভিন্নতার কথা বললেন। মাতবর তাঁর মতামত পুনর্ব্যক্ত করলেন, কিন্তু তেমন কেউ সায় দিলেন না। যাহোক, এরপর কিছু যাত্রীর অনুরোধে বাসে ভিডিও চালু হল। বলিউডি কি যেন ছাড়া হল। কয়েক মিনিটি না যেতেই মাতবর বলে উঠলেন, ‘ইন্ডিয়াই এ দেশটাকে খেয়ে ফেলল।’ এরপর যখন ভিডিওতে বলিউডি নাচ শুরু হয়ে গেল, তিনি হৈ চৈ বাঁধিয়ে দিলেন। ভিডিও বন্ধ করা হল। …
যাহোক, চট্টগ্রাম পেরুনোর পর আমার পাশে বসা সহযাত্রীর সাথে আলাপ হচ্ছিল আমার। তিনি বিএডিসিতে নূতন দায়িত্ব পাওয়া এক কর্মকর্তা। তাঁর প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে দু’একটি প্রশ্ন করার পর দেখি তিনি অনর্গল বলতে থাকলেন বিএডিসি এদেশে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে কি কি করছে। আমার ভালই লাগছিল নিজের প্রতিষ্ঠান নিয়ে গর্বিত একজন লোকের উচ্ছ্বসিত বক্তব্য শুনতে। তিনি বলেই চলছেন, হঠাৎ পেছন থেকে মাতবর বিএডিসি কর্মকর্তার কাঁধে হাত দিয়ে বলে উঠলেন, ‘এবার একটু কথা থামান। আমরা ঘুমাই।’ বিএডিসিওয়ালা কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বলে উঠলেন, ‘আচ্ছা, ঠিক আছে, থ্যাংক ইউ।’ আমি মাতবরকে উদ্দেশ্য করে পিছনে না তাকিয়েই বললাম, ‘আপনি দেখি আমাদের অভিভাবক হয়ে আছেন। বেশতো ঠিক করে দিচ্ছেন কখন আমরা কি করব।’…
যাহোক, চৌদ্দগ্রামের কাছে এক জায়গায় গ্রীন লাইনের একটা বাস আমাদের ওভারটেক করতে গেলে দুই বাসের প্রতিযোগিতায় কয়েকমুহূর্তের জন্য দুর্ঘটনার আশঙ্কায় বাসের সবাই হৈ চৈ করে ওঠে, তাতে আমাদের বাসের ড্রাইভার ক্ষান্ত দেয়। কিন্তু অল্প কিছুদূর যাওয়ার পর এর জের ধরে নূতন বিপত্তি ঘটে। নির্ধারিত জায়গায় চা-বিরতিতে উভয় বাস থামার পর দুই ড্রাইভারের মধ্যে ঝগড়া বাধে। আমাদের বাসটা ছাড়া বাকী সব বাসই ছিল গ্রীন লাইনের। সে কারণে কিনা কে জানে, আমাদের ওভারটেক করতে যাওয়া বাসের ড্রাইভার আমাদের ড্রাইভারের গায়ে হাত দিয়ে বসে। আক্রমণকারী ড্রাইভারকে জাপটে ধরে ঠেকানোর চেষ্টা করছিলেন বিএডিসি কর্মকর্তা। কোত্থেকে এক রড জোগাড় করে এক হেল্পার হম্বি তম্বি করতে করতে তেড়ে আসছিল। রীতিমত হৈ চৈ এবং জটলা বেঁধে গেছে। কিন্তু সেখানে মাতবরের গলা শোনা গেল না। …
তাঁর গলা আবার শুনতে পাই বাস বিরতি শেষে ঢাকার পথে রওনা হবার পর। একবার আমার ঘুম ভেঙে গেল তাঁর গলায়। এবং আলো ফোটার পর যখন গান ছাড়া হল বাসের মিউজিক প্লেয়ারে, একটা গান বেজে ওঠার পর তিনি অনুমোদনসূচক মন্তব্য করতে থাকলেন সবাইকে শুনিয়ে। গানটা ছিল, ‘শুয়াচান পাখি।’ মাতবর বিজ্ঞের মত বলতে থাকলেন, ‘দারুণ গান। সোনাচান পাখি, সোনাচান পাখি…।’
Prashanta Tripura is an Anthropologist, a development consultant, and a former professor at Jahangirnagar University.
Excellent read. There are many matbors about and it is good to see them countered by the BADC wallah and the writer himself. We need more of these perceptive narratives and further commentary on them.