Subir Sen: The world I knew

1532015_583226131795682_3584748506406857641_o


Subir Sen: The world I knew
by Kabir Suman
শেষের দিকটা সুবীর সেন চলে গেলেন। কষ্ট পাচ্ছিলেন। বয়সও হয়েছিল। শান্তি পেলেন।
ইতালো কালভিনো তাঁর একটি উপন্যাসে লিখেছিলেন (সম্ভবত Invisible Cities) মানুষের জীবনে একটা সময় আসে যখন সে উপলব্ধি করে – তার চেনা দুনিয়ার প্রায় সকলেই মৃত।
যে দুনিয়াটা আমার চেনা ছিল, যে-দুনিয়ায় কেউ কেউ সত্যিই আমায় স্নেহ করতেন, আমায় বুঝতেন, সত্যিসত্যিই বুঝতেন ও কদর দিতেন, যে দুনিয়ায় আমার গুরুরা ছিলেন, যে-দুনিয়ায় এমন মানুষ ছিলেন যাঁদের কাছে গিয়ে দু’দণ্ড বসা যেত – এমনিই, যে-দুনিয়ার হালচাল ছিল আমার চেনাজানা, যে-দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমি সেই ছোট্টবেলা থেকে বড় হয়ে উঠেছিলাম, যে দুনিয়ায় সুর ছিল তাল ছন্দ লয় ছিল, যে-দুনিয়ায় ঋত্বিক ঘটক ও বাহাদুর খান একটি বাংলা ছবিতে ভরদুপুরে কলাবতী রাগটি ব্যবহার করে দেখিয়ে দিতে পারতেন – দ্যাখ্‌, প্রয়োগ কাকে বলে, যে-দুনিয়ায় সেই একই ছবিতে শুধু একটি দুটি স্বর পাল্টে নেপথ্যে এমন সুর বাজানো হতো যে আমার সভ্যতা ও স্বপ্ন নিজেকে মেলে ধরত আমারই ভেতর, যে-দুনিয়ায় মিডিয়া রাজা উজির বানাতো না/ বেবাক-অপ্রশিক্ষিত-অর্বাচীনদের বানিয়ে দিতে পারত না যুগপুরুষ, যে-দুনিয়ায় বেতারে ন্যুনতম একটি মান ও উৎকর্ষের পরিচয় না দিতে পারলে এবং প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একটি বিশেষ ‘মাত্রা’ অর্জন না করতে পারলে গ্রামোফোন রেকর্ড বা প্লেব্যাক করার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারত না, যে-দুনিয়ায় সংগীতের বিন্দুবিসর্গও না জেনে/ শুধু প্রলাপ বকে যাওয়ার মতো কিছু কথা সুর করে করে আউড়ে গেলেই সঙ্গীত পরিচালক হয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না, যে-দুনিয়ায় …ইত্যাদি ইত্যাদি, সেই দুনিয়াটা আমার কাছে মৃত। সেই দুনিয়ার বাসিন্দাদের প্রায় সকলেই প্রয়াত। আমি আসলে সেই দুনিয়ারই লোক। আমিও আসলে মরে গেছি। আছি সম্ভবত ভূত হয়ে। ভূতের ২০১৫ গিয়ে ২০১৬ আসছে।

সুবীরদার সঙ্গে দেখা হবে কয়েক বছরের মধ্যেই। কে বলতে পারে – হয়তো তার আগেই। আজ দেখলাম হিন্দু পত্রিকায় লিখেছে তাঁর সম্পর্কে।

ভূতের ২০১৫ সালে এমন একটা কাজ করার সুযোগ পেলাম যেটা ভূতের না, জ্যান্ত লোকদের: অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের ‘শঙ্কর মুদি’ ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা, গান লেখা সুর করা এবং ব্যাকগ্রাউণ্ড মিউজিক রচনা ও বাজানো। – এই কাজটি করতে গিয়ে দেখতে পেলাম তরুণ প্রকৌশলীদের কেউ কেউ এই বাজারেও কত ভালো মানুষ থেকে গিয়েছেন। ৬৭ পেরনো এক প্রবীনকে তাঁরা বাড়ি বয়ে এসে এসে Protools 12 এর মতো জটিল ও জম্পেশ সফটওয়্যারের ব্যবহার শিখিয়ে দিয়ে গেলেন – পাওয়ার এফ এমের ইন্দ্রনীল (আমার বন্ধু রূপসা দাশগুপ্তর মাধ্যমে পরিচয় – রূপসাও
কী-যে ভালো), অনন্দিত রায়, চন্দ্রবিন্দুর কীবোর্ডিস্ট, পিয়্যানিস্ট, সুরকার শিবব্রত (শিবু) -আমার ছাত্র অনিন্দ্যর মাধ্যমে পরিচয়, শিবুর মাধ্যমে চেনা টিটো – আমার বাড়িতে এসে সাহায্য করেছেন আমায়, জোজো – বিখ্যাত সাউণ্ড ডিজাইনার – নিজের উদ্যোগে আমার বাড়িতে এসে দেখিয়ে দিয়েছেন খুবই জরুরি কিছু ব্যাপার, শিখিয়ে দিয়েছেন। ভূতের ২০১৫-তে এই নতুন শিক্ষকদের পেলাম যাঁরা কেউ ভূত নন, মানুষ।

প্রযোজক কৌস্তুভ রায় জ্যান্ত মানুষ, কিন্তু এই বুড়ো মামদো ভূতকে, কী আশ্চর্য সম্মান করেন ও ভালোবাসেন। নামীদামী লোকদের কাছ থেকে বেমালুম অসম্মান পেতে পেতে, তাঁদের দ্বারা উল্টোপাল্টা (অপ)ব্যবহৃত হতে হতে এমনই জায়গায় এসে গিয়েছি যে কেউ সম্মান করলে সন্দেহ হয়। কিন্তু কৌস্তুভ রায় সন্দেহের অতীত। তিনি আমায় সম্মান দিয়েছেন, ভালোবাসা দিয়েছেন, ঠিক সময়ে আমার পারিশ্রমিক দিয়েছেন (সেটাও আমি প্রথমে যা চেয়েছিলাম তা আজকের হিসেবে এত কম ছিল যে আলোচনার মধ্যস্থ আপত্তি জানিয়ে আমায় দর বাড়াতে বলেন – আমি অগত্যা খানিকটা বাড়াই), আমি জান লড়িয়ে কাজ করেছি যা আমি এমনিতেই করি। কিন্তু কৌস্তুভ ও অনিকেত আমার এই জীবনসায়াহ্নের সেরা সৃষ্টি পেলেন, আমিও ধন্য হলাম কৌস্তুভ রায়ের প্রযোজনায় ও অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় কাজ করতে পেরে। এই ছবি যাঁরা দেখবেন তাঁরা সহজে ভুলতে পারবেন না। সকলে কী কাজই না করেছেন এই ছবিতে। ভূতের ২০১৫-তে এ এক চমৎকার অভিজ্ঞতা।

ভূতের ২০১৫-তে ভূতের বানানো বাংলা খেয়াল গানের সেবায় এ-মামদোভূত থেকে গিয়েছে। না না, জ্যান্ত ‘ওস্তাদ’ বা ‘পণ্ডিত’দের ধারে কাছেও আমি নেই। বাংলা আমার মুখের ভাষা। সেই ভাষায় যে খেয়াল গান রচনা করা যায়, খেয়াল আঙ্গিকটি তৈরি হওয়ার আড়াই শতাব্দী পর যে “সাবেকিয়ানা ” ও “ক্লাসিকিয়ানা” (দুটিই রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি) পরিহার করে, অকারণ অলঙ্কার আর গিটকিরির আতিশয্য এড়িয়ে আধুনিক ভঙ্গিতে বাংলা ভাষার ধ্বনিবৈষিষ্ট বজায় রেখে খেয়াল গান বা ‘বন্দিশ’ বানানো যায় ও খেয়াল গাওয়া যায় তার একটা সম্ভাবনা দেখানোর চেষ্টাতেই আমার এই কাজ। এটাই আদর্শ – এমন দাবি এ-ভূতের নেই। এটা একটি সম্ভবনা। ঠিক এভাবেই আমি এক দিন আধুনিক বাংলা গানের খোলনলচে পাল্টে দিয়েছিলাম এবং অনেকে তার বিরোধিতা করেছিল, অন্যান্যদের নাম টেনে এনে আমাকে ও আমার কাজকে হেয় করার অনেক চেষ্টাই করেছিল। তাতে সুবিধে হয়নি। সি পি আই এমের সোনার বাংলা পত্রিকাও কী চেষ্টাই না করেছিল। তার সম্পাদক, বিভীষণবাবু, বর্তমানে ৭৮৬ না ৩৬৬ না ৩৬৫ না ৯৯৯৯৯২০০ কী একটা পত্রিকার সম্পাদক, এক সময়ে তারা চ্যানেলে একটি অনুষ্ঠান করে সেখানেও কী সব করেছিলেন। সকলেই জ্যান্ত, কেউই আমার মতো ভূত নয়, আর ভূত হলেও মুসলমান নয় বলে ‘মামদো ভূত’ নয়। – কিন্তু কোনও কাজই হয়নি বেচারিদের। এখনও আমি গুরুদের কৃপায় একটু আধটু গান গাইতে পারি বাজাতে পারি – ওমা, লোকে টিকিটও কাটে। এক সময়ে সি পি এমের বিপ্লব নামে এক জ্যান্ত কমরেড অবশ্য আজকাল-এ লিখেছিলেন ‘সুমন ৬৫ জনকে সঙ্গে আনে’। – আহা, সি পি এম আজও…জ্যান্ত? নাকি…ইয়ে…আমারই মতো…না-না, বালাই ষাট বা বালাই ২০০৯ ও ২০১১ বা বালাই ২০১৬…এখনো জ্যান্ত। কারা যেন বলছে – ফেসবুকে। আরে না না, এই তো গড়ের মাঠে মিটিং হয়ে গেল। জ্যান্ত বইকি।

বিভীষণবাবু তাঁর সাংখ্য-পত্রিকা, তার চমৎকার বর্তমান শাসকপন্থী লেখকরা (কেউই মমতার অনশনমঞ্চের ধারেকাছে ছিলেন না, ছিলেন আগের শাসকের পা-চাটা জ্যান্ত জিভ দিয়ে। সিঙ্গুর নন্দিগ্রাম আন্দোলনের সময়েও না। তখনও প্রাক্তন শাসকের শ্রীচরণকমলেষু (নাকি ‘লেসু’? – বানানে আমি যা তা)। তার পর, ২০০৯ এর পর শুরু হলো শিবিরত্যাগ। তার পর ২০১১। তারপর – ‘যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক, আমি তোমায় ছাড়ছি না’ – আহা, জ্যান্ত জ্যান্ত সব প্রাণ, কেউই এখনও ভূত নয়, মামদোভূত তো নয়ই।

২০১৫র পর ২০১৬তে আবার কবীর সুমনের মামদো পেছনের খারাপ কথায় নানান কাঠি, কঞ্চি – শুধু যাওয়া আসা/ শুধু ইয়েতে ভাসা।

এরই মধ্যে…২০১৬ এসে পড়ছে, আর ঠিক সাত দিনের মাথায় আমার প্রিয় গায়ক শ্রীকান্তর সঙ্গে আমি গান গাইতে চেষ্টা করব রাজপুরের রবীন্দ্র ভবনে (দাশুমতি ভবন)। দুজনের সঙ্গে শুধু দুটি হারমোনিয়ম থাকবে। আর কোনও যন্ত্র না। শ্রীকান্তর মতো সুর-ক্ষ্যাপা মানুষ বিরল। এখনও জ্যান্ত। মামদোভূতের সঙ্গে গানবাজনা share করতে খুব খারাপ লাগবে বলে মনে হয় না। প্রেতে মানুষে জমবে ভালো। নির্ঘাৎ সুবীর সেনের গাওয়া দু একটি গান গাইব আমরা। – ও…বেশিরভাগ গানই হবে আমাদের শোনা-জানা গান – সেইভাবে দেখতে গেলে এক মৃত দুনিয়ার গান…কিন্তু গানগুলি এখনও কারুর কারুর স্মৃতিতে জ্যান্ত।

দুটি হারমোনিয়ম। আহা। ভাবছি – একটা নতুন ব্যাণ্ড করলে কেমন হয়। তবে সেই ব্যাণ্ডের সঙ্গে যে নাচা যাবে না! – শ্রীকান্তকে এখনও কিছু বলিনি। মনে মনে নাম রেখেছি – ‘কান্তকবীর ব্যাণ্ড’। জমে যেতে পারে কিন্তু। শুধু বাংলা গান – মৃত দুনিয়ার জ্যান্ত গান এবং এখনকার কিছু রচনাও – কী??? জমে যাবে না??? শ্রীকান্ত রাজি হবেন কি? ‘প্রেতের সঙ্গে খেলিব আজিকে গানের খেলা…’ – আহা…সাতই জানুয়ারির দিকে চেয়ে আছি, অপেক্ষা করছি। শ্রীকান্ত আর আমি গান share করব। দুজনেই বাজাবো। শুধু হারমোনিয়ম। রীতিমতো উত্তেজিত

১২ই ফেব্রুয়ারি ‘ভাবনা’র উদ্যোগে বিড়লা একাডেমিতে বাংলা ভাষায় খেয়াল গানের আসর। আবার বলি – কোনও ‘ওস্তাদি’ বা ‘পণ্ডিতি’ নয়। নিতান্ত সবিনয়ে একটি সম্ভাবনার হদিশ দিতে চেষ্টা করা। কোনও বড় দাবি নেই। বিরোধীরা সাবধান। বেশী বিরোধিতা করবেন না এই সম্ভাবনার। মনে আছে তো? ১৯৯১ সাল থেকে আমার আধুনিক বাংলা গানের সদলে বিরোধিতা, স-মিডিয়া বিরোধিতা এবং আমার মুণ্ডপাত সত্ত্বেও শেষবেশ কী হয়েছিল? কী হয়েছে? আমি এখনও গান বানিয়ে যাচ্ছি। লোকে পয়সা দিয়ে শুনছে, পয়সা না দিয়েও। সব্বাই নয়। সব্বার জন্য সবকিছু নয়। কেউ কেউ শুনছেন। কিন্তু শুনছেন। সেই মুণ্ডপাত-করা লোকটার তৈরি গান গেয়ে রূপঙ্কর কিন্তু সেরা পুরুষ প্লেব্যাক শিল্পীর শিরোপা পেয়েছেন। কাজেই…সেই মুণ্ডপাতে-অভ্যস্ত মামদোভূতের এই নবতম বিনীত উদ্যোগের পেছনের খারাপ কথায় বেশি লাগলে দেখবেন লোকে এটাই শুনছে বেশি করে। কী দরকার…চেপে যান।

২০১৬ সালটা হোক, দরকার হলে, চেপে যাওয়ার বছরও।

এই যেমন, মমতা সরকার যে উন্নয়নের কাজগুলো করছেন, গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা সরকারি হাসপাতালে যে কাজগুলো হচ্ছে, কলকাতার রাস্তাঘাট যে আগের চেয়ে বেশি পরিস্কার, এখানে ওখানে রাস্তা তৈরি হচ্ছে, আমাদের এই গড়িয়া এলাকাতেই খালটার ওপর (আমার গর্বের গাঙুর) কতগুলো সেতু তৈরি হয়েছে, দোকানঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে, ‘কন্যাশ্রী’ হয়েছে, মৃন্ময়ী কাল জানালেন (তিনি একজন পশুচিকিৎসক) খেয়াদা-কৃষিমেলায় আদিবাসী মেয়েদের সাইকেল দেওয়া হয়েছে। – এই খেয়াদায় এক সময়ে কাদের যেন অস্ত্রকারখানা ছিল। উন্নয়নের লেশমাত্র ছিল না বছরের পর বছর। আজ, একবার দেখা যাক। নাকি দেখবেন না, জানবেন না, বুঝবেন না।

যে কাজগুলো হচ্ছে সেগুলোর জন্য সাধুবাদ না দিন বেমক্কা নিন্দে করবেন না, গাল পাড়বেন না। অথবা পেড়ে যান। ডিম যখন পাড়তে পারি না আমরা, গালই পাড়ি।

যাক – মামদো তার প্রত্যাশিত মমতা-দালালিটা করল।

ঠিকই তো। বলা তো যায় না, আমার এই ফেসবুক-দালালির জন্য ফের যদি একটা পুরস্কার জুটে যায়। নিশ্চিন্ত থাকুন। আমি মৃত দুনিয়ার লোক। মামদোভূত হয়ে আছি। আর কিছুকালের মধ্যে অন্য লোক-এ চলে যাবো।

কে বলতে পারে – ২০১৬ই হয়তো সেই লোক-এ চলে যাওয়ার বছর। বেশ, তাইই হোক। শুধু তার আগে, ৭ জানুয়ারি আমি যাঁর ফ্যান সেই শ্রীকান্ত আচার্যর সঙ্গে আমার গানাগানি আর হারমোনিয়মির আসরটা হয়ে যাক/ ৫ ফেব্রুয়ারি ‘ভাবনা’র আয়োজনে বাংলা খেয়াল গানের আসরটা হয়ে যাক…আর ৫ মার্চ কলামন্দিরে মামদোভূতের একক গানের অনুষ্ঠানটা হয়ে যাক। তারপর নাহয় —–

২০১৬ শুভ হোক সক্কলের জন্য, এমনকি তাঁদেরও জন্য – আমার মা-মাসির বন্দোবস্ত না করলে যাঁদের পেচ্ছাপ পায়খানা আটকে যায়। – তাঁদের জন্য, শুভ বাথরুম-ট্রিপ।

স্বাভাবিক জ্যান্ত ও মৃতদের জন্য – নতুন উদ্যম, নতুন অভিজ্ঞতা, নতুন বোধ, নতুন করে ভালোবাসা, সম্মান জানানো, নতুন করে চুমু খাওয়া, আদর করে ফাটিয়ে দেওয়া, নতুন করে কাঁদা, নতুন করে সুর লাগানো, নতুন করে চুপ করে যাওয়া।

++++++

৩১ ডিসেম্বর ২০১৫

Leave a comment