Piash Karim: The Two Sides of Nationalism

জাতীয়তাবাদের একূল-ওকূল

পিয়াস করিম


“যে জাতীয়তাবাদ নিজেকে অতিত্রম করার, নিজেকে ভেঙেচুরে আন্তর্জাতিক মানবতায় একীভূত করার নিরন্তন চর্চাকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারে না, আজকের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কাছে তার কোনো মূল্য নেই।”

জাতীয়তাবাদ বিমূর্ত, দেশ-কাল ঊর্ধ্ব প্রত্যয় নয় কোনো। ইতিহাসের 
সুনির্দিষ্ট ভূমিতে এর শেকড়-বাকড় গাঁথা। জাতি যেমন চূড়ান্তভাবে 
স্থিতিশীল, অন্তিম বিশ্লেষণে মীমাংসিত কোনো প্রত্যয় নয়, এর নির্মাণ-বিনির্মাণ যেমন সম্ভব শুধু ইতিহাসের বহুমাত্রিক ভাংচুরের মধ্য দিয়েই, 
জাতীয়তাবাদও তেমনি সুস্থিত অচলায়তন নয় কিছু। জাতি আর 
জাতীয়তাবাদের সীমারেখা বারবার পাল্টে যায়, এর অন্তরে-বাইরে 
বারবার পালাবদলের অভিঘাত এসে ধাক্কা দেয়।

ঔপনিবেশিক প্রতীচ্যে জাতীয়তাবাদ যেই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিকশিত 
হয়েছে, উপনিবেশে তা হয়নি। উপনিবেশে তার গড়ে ওঠার আখ্যান 
আলাদা। উপনিবেশে জাতীয়তাবাদের উত্থান হয়েছে ঔপনিবেশিকতার 
বিরুদ্ধে নিজের অবস্থানকে ক্রমাগত সংজ্ঞায়িত করতে করতে, 
উপনিবেশবিরোধী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। যেই জাতীয়তাবাদের সঙ্গে 
ধনতন্ত্রের কেন্দ্রীয় বিকাশের গহিন-গভীর আত্মীয়তা যার সঙ্গে 
উপনিবেশবাদ আর সাম্রাজ্যবাদের ইতিহাসের নিগূঢ় সম্পর্কের বিন্যাস, 
তার সঙ্গে উপনিবেশে বেড়ে ওঠা জাতীয়তাবাদের পার্থক্যটা তো 
বুঝতেই হবে। এই পার্থক্য ভিন্ন ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার, বৈশ্বিক 
ধনতন্ত্রের কাঠামোতে ভিন্ন অবস্থানের। ধনতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে যেই 
ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বুর্জোয়ার স্বাধীন বিকাশ ঘটেছে, 
উপনিবেশে তা হয়ে ওঠেনি। ঔপনিবেশিকতা এই বিকাশের সম্ভাবনাকে 
প্রবলভাবে বিঘ্নিত করেছে।

ধ্রুপদী মার্কসীয় তত্ত্বে এই দুই জাতীয়তাবাদের পার্থক্যটি মর্মে মর্মে 
বুঝেছিলেন লিওন ট্রটস্কি। ট্রটস্কি ব্যাখ্যা করেছিলেন কী করে 
ঔপনিবেশিক বুর্জোয়ার জাতীয়তাবাদ সমাজতন্ত্রের আন্দোলনে 
অস্বচ্ছতা তৈরি করে আন্দোলন থেকে আমাদের দৃষ্টি সরিয়ে নেয়। 
ট্রটস্কি বলছেন, এর বিপরীতে উপনিবেশের শ্রমিক-কৃষকের 
জাতীয়তাবাদে রয়েছে বিপ্লবী উপাদান।

ঔপনিবেশিকতার সঙ্গে ঔপনিবেশিক দেশের জাতীয়তাবাদের সম্পর্কের 
দ্বান্দিকতাটিও এখানে বুঝতে হবে। উপনিবেশের শ্রম থেকে, রক্ত থেকে 
কেন্দ্রের পুঁজিবাদ তার প্রাণশক্তি আহরণ করে। আর এই পুঁজিবাদের 
সঙ্গেই ঘটে ঔপনিবেশিক দেশের জাতীয়তাবাদের যৌথ বিকাশ। 
ঔপনিবেশিক নিপীড়নের দুঃস্বপ্ন আবার তাড়া করে ঔপনিবেশিক 
দেশের জাতীয়তাবাদের চরিত্রকে। অ্যাইমে সেজেয়ার যেমন বলেছেন 
কী করে ঔপনিবেশিক বর্বরতা ফ্যাসিবাদী গণহত্যা হয়ে ইউরোপে 
ফিরে আসে। ভিন্ন প্রেক্ষিতে ওয়াল্টার বেঞ্জামিন বলেছিলেন, সভ্যতার 
ইতিহাস তো আসলে বর্বরতার ইতিহাসও।

ঔপনিবেশিক দেশের জাতীয়তাবাদ যখন নিজের স্বাধীনতার 
আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেছে, ঠিক একই সময় সে উপনিবেশের জাতীয় 
চেতনাকে নির্মমভাবে দাবিয়ে দিয়েছে। ঔপনিবেশিক শক্তি আর 
উপনিবেশের জন্য দাঁড়া করানো হয়েছে অধিকারের আলাদা মাপকাঠি। 
১৯৪৫-এর মে মাসে ফ্রান্স যখন জার্মান দখলদারিত্ব থেকে তার মুক্তিকে 
উদযাপন করছে, সে মাসেই আলজেরিয়ার ক্যানিলিয়া অঞ্চলের 
সেতিফে ঘটেছিল মুসলিম অভু্যত্থান। সদ্য পরাধীনতা থেকে বেরিয়ে 
আসা ফরাসি বাহিনী এই অভু্যত্থানকে সেদিন নিষ্পেষিত করেছিল 
৪৫,০০০ প্রাণের বিনিময়ে।

কিন্তু উপনিবেশের জাতীয়তাবাদ অবিভাজিত কোনো ধারণা নয় 
আবার। এর মধ্যে অঙ্গাঙ্গি জড়িয়ে রয়েছে শ্রেণী আধিপত্যের প্রশ্ন। 
উপনিবেশের বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদ এবং উপনিবেশের নিপীড়িত 
জনগণের প্রতিরোধের চেতনা, এই দুইয়ের মধ্যে গভীর পার্থক্য তো 
রয়েছেই। বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদ জাতীয় স্বাধীনতার স্বপ্নকে এগিয়ে 
নিয়ে যেতে পারে না বহুদূর। ফ্রানৎস ফানন আমাদের যা মনে করিয়ে 
দিয়েছিলেন অনেক আগে, আজকের প্রেক্ষিতেও তা প্রযোজ্য। উত্তর-
ঔপনিবেশিক দেশগুলোতে জাতীয় বুর্জোয়ার কোনো সত্যিকারে অস্তিত্ব 
নেই। উত্তর-উপনিবেশের বুর্জোয়ার শ্রেণী স্বার্থ-আকাঙ্ক্ষা গ্রন্থিত রয়েছে 
আন্তর্জাতিক পুঁজির সঙ্গে। নয়া ঔপনিবেশিক বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার 
স্বপ্ন তার নেই, ক্ষমতাও নেই। তার জাতীয়তাবাদ তাই অনিবার্যভাবে 
খণ্ডিত, সেবাদাসত্যের হাজার বাঁধনে বাঁধা। বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদ 
সমাজের দ্বন্দ্বগুলোকে ধোঁয়াশে করে তোলে, সমাজ কাঠামোর 
ফাটলগুলোর ওপর কৃত্রিম প্রলেপ বুলিয়ে জাতীয় ঐক্যের মিথ তৈরি 
করে। জাতীয়তাবাদী মতাদর্শ হয়ে ওঠে শ্রেণী শোষণের অমোঘ অস্ত্র।

জাতীয়তাবাদের রয়েছে সুনির্দিষ্ট লিঙ্গীয় চরিত্রও। উপনিবেশবাদ এবং 
উপনিবেশবাদবিরোধী সংগ্রাম, এই দুইয়ের মধ্যেই রয়েছে পিতৃতন্ত্রের 
গেড়ে বসা অবস্থান। ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রে সংস্কৃতিতে-অর্থনীতিতে যেমন 
উপনিবেশবাদবিরোধী লড়াইতেও তেমনি, বেশির ভাগ সময়ে নারীর 
অবস্থান থেকেছে মূল স্রোতের বাইরে, বড়জোর প্রান্ত সীমায়। যুদ্ধে-বিপ্লবে-সংকটে নারীর ভিক্টিমাইজেশনের বয়ান যত তৈরি হয়েছে, 
ততটা বর্ণিত হয়নি নারীর প্রতিরোধের আখ্যান। উপনিবেশ-উত্তর 
রাষ্টের চরিত্রও স্তাপিত হয়েছে পিতৃতন্ত্রের অবয়বে। ‘জাতির পিতা’ 
কিংবা ‘মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক’-এর কাল্কল্টগুলো তো নিষ্পাপ, নিরীহ নয় 
কখনো। কখনোই নয় লিঙ্গ নিরপেক্ষ। এই পিতার দুহিতারা কিংবা 
ঘোষকের পত্মীরা যখন রাষ্ট্রযন্ত্রের কর্ণধার হন তাদের ক্ষমতার উৎস 
তখনো বোনা থাকে পিতৃতন্ত্রের বিস্তৃত জটিল বিন্যাসে, তাদের 
ব্যক্তিগত লিঙ্গ পরিচয় কখনো লিঙ্গীয় সমতার সামাজিক ডিসকোর্সে 
রূপান্তরিত হয় না।

উত্তর-ঔপনিবেশিক জাতীয়তাবাদ আবার পর্যবসিত হতে পারে 
আন্তর্জাতিক বৈরিতাতেও। জাতীয়তাবাদের বয়ান তার সীমারেখার 
বাইরে ঠেলে দিতে পারে ভিন্ন জাতির, ভিন্ন সত্তার ভিন্ন কন্ঠস্বরকে। 
ফাননকেই উল্লেখ করি আবার। জাতীয় চেতনার সংকটের কথা বলতে 
গিয়ে তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন জাতীয়তাবাদ কেমন করে পরিণত হয় 
অতি জাতীয়তাবাদে, শভিনিজমে, বর্ণবাদে। ইরাক-ইরানের 
সহোদরঘাতী যুদ্ধের কথা তো আমরা জানি, জানি রুয়ান্ডার গৃহদ্বন্দ্বের 
রক্তক্ষরণকে।

উত্তর-ঔপনিবেশিক জাতীয়তাবাদ কি সহজেই আত্মস্থ করে নিতে পারে 
ধনতন্ত্রের কেন্দ্রে তৈরি হওয়া জাতীয়তাবাদের দর্পণ-অবয়বকে, তাতো 
আমরা বারবার দেখেছি। আমরা দেখেছি কী করে বহুজাতিক উত্তর-
ঔপনিবেশিক দেশে বৃহৎ জাতির আধিপত্য প্রতিষ্ঠা পায়। ক্ষুদ্র 
জাতিসত্তার ওপর তৈরি হয় বড় জাতির দাপুটে আধিপত্য। উদাহরণ 
খোঁজার জন্য বেশিদূর যাওয়ার দরকার নেই। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় 
সীমায় বসবাসকারী প্রান্তিক জাতিদের ওপর বাঙালি রাষ্ট্রের নিপীড়নের 
ইতিহাস তো আমাদের হাতের কাছেই রয়েছে।

জাতীয়তাবাদের এই যে শ্রেণী-লিঙ্গ-জাতিসত্তা চরিত্র-এর বিপরীতে 
আমরা কোন অবস্থানে দাঁড়াব? জাতীয়তাবাদের সংকট অতিক্রমণের 
প্রয়াসে আমরা কি জাতীয়তাবাদকে পুরোপুরি অস্বীকার করব? 
 ইতিহাসের ভিন্ন পটভীমির রোজা লুক্সেমবার্গ জাতীয়তাবাদ প্রত্যাখ্যান 
করেছিলেন। মার্কসীয় তত্ত্বে-প্রয়োগে অসামান্য অবদান লুক্সেমবার্গের 
কিন্তু এটা তো আজ মেনে না নিয়ে উপায় নেই যে, জাতীয়তাবাদের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে লেনিনের উপলব্ধির সেই প্রগাঢ়তা তার ছিল না। 
একেবারে ভিন্ন রাজনৈতিক ভুবন থেকে হাল ফ্যাশনের মেট্রোপলিটন 
তাত্ত্বিক হোমি ভাবা কিংবা জুলিয়া ক্রিস্টেভাও জাতীয়তাবাদের 
তাৎপর্যকে অস্বীকার করেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে — সাম্রাজ্যবাদের, নব্য 
উপনিবেশবাদের এই আগ্রাসী যুগে জাতীয়তাবাদের ফ্রেম বাদ দিয়ে কি 
আমরা নিপীড়িত জাতির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে বুঝতে পারব 
ঠিকঠাক? সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ইরাকি জনগণের প্রতিরোধ, মার্কিন 
সাম্রাজ্যবাদের আধিপত্যের বিরুদ্ধে কিউবা, ভেনিজুয়েলা, বলিভিয়ার 
মানুষের সাহসী সংহতি, পুঁজিবাদী বৈশ্বীকরণের বিরুদ্ধে আজকের 
পৃথিবীর গণতান্ত্রীক আন্দোলনের মধ্যে এই জাতীয় স্বাধীনতার প্রশ্নের 
যে নিরন্তন চর্চা রয়েছে, একে কী করে বুঝব আমরা জাতীয়তাবাদকে 
খারিজ করে দিয়ে?

এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে জাতীয়তাবাদের আমূল প্রত্যাখ্যানের মধ্য 
দিয়ে নয়, বরং জাতীয়তাবাদকে ভিন্নভাবে পাঠ করে, গণতান্ত্রিক 
আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিপ্লবী জাতীয়তাবাদের ভিন্ন তত্ত্বায়ন দাঁড় 
করিয়ে, ভিন্ন প্রয়োগের প্রক্রিয়া গঠন করে। হোমি ভাবার মত উত্তর-ঔপনিবেশিক লেখক Hybridity-র ওপর জোর দিতে গিয়ে 
জাতীয়তাবাদকে প্রত্যাখ্যান করতে পারেন, রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদের 
সাথে বিপ্লবী জাতীয়তাবাদের বিভাজনরেখাটি বুঝতে তিনি ব্যর্থ হতে 
পারেন, কিন্তু আমাদের ভুললে চলবে না যে, পৃথিবীর কোটি কোটি 
মানুষ এই জাতীয় পরিচয়ের স্পেসি-এ থেকে নিপীড়িত হন, এই জাতীয় 
সত্তার জন্য মৃতু্যবরণ করেন, এই জাতীয়তার জমিতে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ 
নির্মাণ করেন। টেরি ঈগলটন তো সঠিক বটেই– শ্রেণী, জাতি, লিঙ্গ- 
এই ‘essentialist’ প্রত্যয়গুলোকে প্রত্যাখ্যান করলে আসলে 
নিপীড়কদের সুবিধা করে দেওয়া হয়।

আমাদের আজকের প্রয়োজন উত্তর-ঔপনিবেশিক জাতীয়তাবাদের 
বুর্জোয়া পিতৃতান্ত্রীক বড় জাত্যাভিমানী চরিত্রটির বিনির্মাণ। এই 
বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে নির্মিত হতে থাকবে বিপ্লবী জাতীয়তাবাদের 
প্র্যাক্সিস। বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে নিপীড়িত মানুষের সংহতি 
পিতৃতান্ত্রীক জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে লিঙ্গসাম্য বড় জাতির আধিপত্যের 
বিরুদ্ধে জাতিসত্তাদের সম্মিলিত সহোদরত্ব এই বিপ্লবী জাতীয়তাবাদের 
মূল ভিত্তি।

জাতীয়তাবাদকে যদি আমরা দেখি স্থান-কাল-সময় উত্তীর্ণ একটি meta narrative হিসেবে, তাহলে আমাদের পক্ষে বিপ্লবী জাতীয়তাবাদ নির্মাণ সম্ভব হবে না। ‘জাতি’ প্রত্যয়টি যেমন নয় primordial, শেষ অব্দি বেনেডিক্ট এন্ডারসন যেমন বলেছেন,’জাতি’ ইতিহাসের মূর্ত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া imagined community (এন্ডারসনের ইউরোকেন্দ্রিক বিশ্লেষণের সবটাতে 
আমার সায় নেই, কিন্তু সেটি আরেক তর্কের বিষয়), বিপ্লবী 
জাতীয়তাবাদও কোনো সার্বভৌম, চূরান্ত মতাদর্শ নয়। এর জন্ম-
বিকাশ-অবস্থান ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট জায়গা-জমিতে। 
উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, নব্য উপনিবেশবাদের প্রতিরোধ পর্বে যেই বিপ্লবী জাতীয়তাবাদের উত্থান, তার মধ্যে প্রতিনিয়ত ক্রিয়াশীল থাকতে 
হবে বৈশ্বিক সাম্য, স্বাধীনতা, সহোদরত্ব, ভবিষ্যতের শোষণনিপীড়নহীন 
পৃথিবীর আকাঙ্ক্ষা। বিপ্লবী জাতীয়তাবাদকে তাই বুঝতে 
হবে বৈশ্বিক সংহতির যূথবদ্ধ স্বপ্নের একটি নির্দিষদ্ব মুহূর্ত হিসেবে।

জাতিগত অসাম্য, শোষণ, নিপীড়ন রয়েছে বলেই জাতীয়তাবাদের 
প্রাসঙ্গিকতা, এই বাস্তবতাটি বিস্মৃত হওয়ার অবকাশ নেই আমাদের। 
আমরা যদি ভবিষ্যতের সাম্যের পৃথিবীকে কল্পনা করতে পারি, 
জাতীয়তাবাদের ঐতিহাসিক কার্যকারিতা ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকেও 
আমাদের কল্পনা করতে হবে। যে জাতীয়তাবাদ নিজেকে অতিত্রম করার, নিজেকে ভেঙেচুরে আন্তর্জাতিক মানবতায় একীভূত করার নিরন্তন চর্চাকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারে না, আজকের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কাছে তার কোনো মূল্য নেই।

লেখক : অধ্যাপক, রাষদ্ব্রবিজ্ঞান ও সমাজবিদ্যা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রথম প্রকাশ: সমকাল, ৩১ মে ২০০৭।

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s